হাপুস হুপুস শব্দ, চারিদিক নিঃশব্দ,
ইলিশ কাঁদিয়া যায় পাতে...
দুই বঙ্গদেশের আজব লড়াই চিংড়ি ইলিশ, ইস্টবেঙ্গল আর মোহনবাগানে| সর্ষে ইলিশ না চিংড়ির মালাইকারি? পুজোর সময় এসব ভুলে দুপার বাংলা ডুব দেবে চিংড়ি ইলিশেই |
মা কাকিমার হাতের ইলিশ ভাপা আর জেন-এক্সের বিরিয়ানি প্রীতি দুইয়ের মাঝে হিমশিম খেতে থাকা আমি শেষমেষ সিদ্ধান্ত নিলাম ইলিশের বিরিয়ানি খাবো | যেমন ভাবা অমনি কাজ | হাঁস ছিল সজারু ব্যাকরণ মানি না,হয়ে গেল হাঁসজারু কেমনে তা জানি না ! কিন্তু সম্রাজ্ঞীর তো দেমাক অন্তহীন ! ওনার রূপ,রস, গন্ধ, বর্ণ,একচুল এধার ওধার করেছ তো মরেছ ! তাই তাই এ হেন বঙ্গদেশের সম্রাজ্ঞীর প্রেমে মুঘল বাদশাকে মজাতে হাজির
হলাম ইলিশ বিরিয়ানি নিয়ে....
উপকরণ (দুজনের মত )
1) ইলিশ 4 পিস বড়ো পরিষ্কার করে কাটা
2) নুন (এক টেবিল চামচ ম্যারিনেশনের জন্য, এক টেবিল চামচ বিরিয়ানির জন্য )
3) হলুদ (এক টেবিল চামচ )
4) নারকেল কুরিয়ে বাটা (এক টেবিল চামচ )
5) নারকেলের দুধ (এক কাপ )
6)সরু করে কাটা পেঁয়াজ ও সর্ষের তেল বেরেস্তার
7) টক দই (দুই টেবিল চামচ )
8) শুকনো লঙ্কা গুঁড়ো (এক চা চামচ )
9) পেঁয়াজ বাটা (এক চা চামচ )
10) আদা বাটা (এক চা চামচ )
11) রসুন বাটা ( এক চা চামচ )
12) সর্ষে পোস্ত বাটা ( দুই টেবিল চামচ )
13) চেরা কাঁচালঙ্কা (তিন চারটে )
14)কাঁচা লঙ্কা বাটা (এক টেবিল চামচ )
15) একটা পাতিলেবুর রস
16) গোটা গোলমরিচ গুঁড়ো (এক টেবিল চামচ )
17) দেশি জাফরান (চারটে বীজ )
18)সর্ষের তেল চার টেবিল চামচ
19) ঘি দুই টেবিল চামচ
20) 200 গ্রাম বাসমতি চাল
পদ্ধতি :
সর্ষের তেল ভালো করে গরম করে কুচানো পেঁয়াজ সোনালী করে ভেজে বেরেস্তা তৈরী করে রাখুন |
ইলিশ মাছ ভালো করে ধুয়ে পরিমান ও স্বাদ মত নুন, হলুদ মাখিয়ে পাঁচ মিনিট রাখুন | একটা পাত্রে নারকেলবাটা, ফেটানো টক দই, কাঁচালঙ্কা বাটা, আদা বাটা, অল্প সর্ষের তেল, সর্ষে পোস্ত বাটা নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে মশলা তৈরি করুন | এরপর অর্ধেক মশলা মাছে মাখিয়ে মিনিট কুড়ি ম্যারিনেশন করুন | একটা কড়াইতে দুই টেবিল চামচ সর্ষের তেল গরম করে চেরা কাঁচালঙ্কা ও অল্প কুঁচানো পেঁয়াজ ফোড়ন দিন | পেঁয়াজ হালকা বাদামি হয়ে এলে তৈরী করা মশলা ও সামান্য জল দিয়ে পাঁচ মিনিট কষুন | এরপর মশলা মাখানোর মাছ কড়াইতে দিয়ে সাবধানে উল্টে পাল্টে ঢাকা দিয়ে হালকা আঁচে দশ মিনিট কষে মশলা মাছ তৈরি করে রাখুন | বিরিয়ানির ভাতের জন্য জলে চারটে তেজপাতা, চারটে লবঙ্গ, চারটে ছোটো এলাচ, দারচিনি দিয়ে ভালো করে পাত্রে সিদ্ধ করুন | চাল নব্বই শতাংশ সিদ্ধ হলে ফ্যান ঝরিয়ে একটি ছড়ানো পাত্রে রেখে ভালো করে ঝাঁকিয়ে
নিন যাতে ভাত ঝরঝরে হয় |এরপর স্বাদমতো নুন, চিনি, পাতিলেবুর রস, বিরিয়ানির মশলা, গোলমরিচ গুঁড়ো ভাতে মিশিয়ে নিন | বিরিয়ানি দম দেওয়ার পাত্রে ভালো ভাবে ঘি মাখিয়ে নিন ও পরতে পরতে ভাত সাজান | বেটে রাখা জাফরানের সাথে নারকেল দুধ মিশিয়ে ভাত এ অল্প অল্প করে ছড়িয়ে দিন | মশলা সহ মাছ দিয়ে উপরে আরো এক স্তর ভাত সাজান |
সাজানো হলে সবশেষে চেরা কাঁচালঙ্কা, ভেজে রাখা বেরেস্তা ও ঘি ছড়িয়ে ভালো ভাবে ঢাকনা দিয়ে দমে পনেরো মিনিট বসিয়ে দিন | এইতো হল রাজসূয় যজ্ঞ বন্ধুগণ. লেকিন ইসকে লিয়ে জান কবুল হ্যায়. কোনো এক মুষলধারা সন্ধ্যায় নবাব সিরাজদৌল্লা হয়তো দেখেছিলেন এক প্লেট ইলিশ বিরিয়ানির স্বপ্ন | দুপার বাংলা না মিলুক. কাবুল আর হিন্দুস্তান মিলেমিশে জান কবুল কিয়া জায়ে ইলিশ বিরিয়ানির সৌজন্যে !
Yorumlar